দীর্ঘ দেড় মাস ধরে জলমগ্ন অবস্থায় রয়েছে ঘাটাল। এই পরিস্থিতি থেকে মুক্তি দিতে বর্ষা পেরোনোর পরই কাজ জোরকদমে শুরু হবে বলে জানালেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। মঙ্গলবার ঘাটাল এলাকায় পৌঁছে তিনি ঘাটাল মাস্টার প্ল্যান বাস্তবায়নে ৫০০ কোটি টাকার নতুন বরাদ্দের কথা ঘোষণা করেন। মুখ্যমন্ত্রী জানান, কাজের বরাত ইতিমধ্যেই দেওয়া হয়েছে এবং নভেম্বরের মধ্যে ড্রেজিং-সহ প্রাথমিক পর্বের কাজ শেষ করার লক্ষ্য নির্ধারিত হয়েছে। তাঁর সফরে পাশে ছিলেন ঘাটালের সাংসদ ও অভিনেতা দেব।
এই দিন দুপুরে মুখ্যমন্ত্রী প্রথমে হুগলির আরামবাগ ও খানাকুল অঞ্চলের জলাবদ্ধতা পরিস্থিতি ঘুরে দেখেন, তারপর ঘাটালের উদ্দেশ্যে রওনা দেন। যাত্রাপথে তিনি ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগরের জন্মস্থান বীরসিংহ গ্রামে থামেন। সেখানকার বাসিন্দারা মুখ্যমন্ত্রীকে একটি বিদ্যাসাগরের আবক্ষ মূর্তি উপহার দেন, যা বাংলা ভাষা ও সংস্কৃতি রক্ষায় সরকারের অবস্থানকে স্বীকৃতি হিসেবে তুলে ধরা হয়। এরপর তিনি একটি স্বাস্থ্য শিবিরে যান এবং স্থানীয় পরিস্থিতি সরেজমিনে খতিয়ে দেখেন।

ঘাটালে পৌঁছে প্লাবন সমস্যা নিয়ে কেন্দ্রকে ফের দায়ী করেন মমতা। তিনি বলেন, “ঘাটালের এই জায়গায় নিচু জমি। এখানে অনেক কাজ হয়েছে। আমরা মাস্টার প্ল্যানের জন্য ২০ বছর ধরে অপেক্ষা করেছি। ওরা কিছু করেনি। আমরা কপালেশ্বর-কেলেঘাই প্রকল্প করেছি। আমরা ঘাটাল মাস্টার প্ল্যানের জন্য দেড় হাজার কোটি টাকা দিয়েছি। কিছু কাজ হয়েছে। বর্ষার পর পুরোদমে কাজ শুরু হবে। এবার বর্ষা আগে শুরু হয়েছে। একদিকে ডিভিসির ছাড়া জল, অন্যদিকে বর্ষার জল। কথাও শোনে না ডিভিসি। আমরা বলেছি, ঘাটাল মাস্টার প্ল্যানের জন্য মানুষকে উচ্ছেদ না করে বিকল্প পথ বেছে নিতে হবে। তার জন্য সমীক্ষার কাজ শুরুও হয়েছে। নভেম্বরের মধ্যে ড্রেজিংয়ের কাজ শেষের চেষ্টা করছি। ২৫ কিলোমিটার নদীপথে ড্রেজিং করা হবে। ৭ কোটি টাকার পাম্প কেনা হচ্ছে।”
সেই সঙ্গে কৃষকদের ক্ষয়ক্ষতি নিয়ে মুখ্যমন্ত্রী আরও একটি বড় ঘোষণা দেন। তাঁর বক্তব্য, “বর্ষায় কৃষকদের জমি ডুবে গিয়েছে জলে। কারও ধান, কারও পাট, কারও আলুচাষে ক্ষতি হয়েছে। তাঁদের জন্য বিমার টাকা দিই আমরা। শস্যবিমার পুরো টাকা দেব। জল একটু কমে গেলেই কৃষিদপ্তর সমীক্ষা করে টাকা দেবে।”