পশ্চিমবঙ্গ সরকার খণ্ডঘোষের ওয়ারী গ্রামে বীর বিপ্লবী বটুকেশ্বর দত্তের স্মৃতি রক্ষার্থে একটি মিউজিয়াম তৈরি করছে। এই মিউজিয়ামকে সাজানোর জন্য বটুকেশ্বর দত্ত স্মৃতি সংরক্ষণ কমিটির সদস্যরা ২৫শে ডিসেম্বর তার কন্যা ভারতী দত্ত বাগচী তথা বিপ্লবীর পাটনার বাড়িতে উপস্থিত হয়ে ব্যবহৃত পোশাক ও দ্রব্যাদি এবং তার মরদেহে মোড়ানো জাতীয় পতাকা গ্রহণ করেন।
প্রসঙ্গত উল্লেখ্য ভারত সরকার বিপ্লবী বটুকেশ্বর দত্তের মৃত্যুর পর জাতীয় পতাকা শরীরে চাপিয়ে সম্মাননা জানিয়েছিলেন। ওই জাতীয় পতাকা পরিহিত অবস্থায় দিল্লির টাউন হলে জনসাধারণকে শ্রদ্ধা জানানোর জন্য শায়িত রাখা হয়েছিল । ওই জাতীয় পতাকা মোরা বীর বিপ্লবী বটুকেশ্বর দত্তের মরদেহ খণ্ডঘোষের ওয়ারি গ্রামে আকাশে সেনাবাহিনীর বিমানে করে ঘোরানো হয়েছিল এবং সেই জাতীয় পতাকা মোড়ানো অবস্থায় ট্রেনে করে ভারত সরকার পাঞ্জাবের ফিরোজপুরে হুসেন ওয়ালিতে ভগত সিং, রাজগুরু ,শুকদেবের সমাধির পাশে তাদের বন্ধু স্বাধীনতা সংগ্রামী বীর বিপ্লবী বটুকেশ্বর কে সমাহিত করা হয়।
সেই জাতীয় পতাকা আবেগঘন পরিবেশে মিউজিয়ামের জন্য তুলে দেন ভারতী দেবী। তিনি বলেন, তার বাবা জীবিত অবস্থায় যে সম্মান পাওয়ার কথা তা না পেলেও, তার মৃত্যুর পর এই স্মৃতি সংরক্ষণ এবং মিউজিয়াম নির্মাণে যে উদ্যোগ নিয়েছে পশ্চিমবঙ্গ সরকার তা তাদের পরিবারের জন্য গর্বের বিষয়।
এদিন এই জাতীয় পতাকা সহ বিভিন্ন সামগ্রী নেবার সময় উপস্থিত ছিলেন বিপ্লবী বটুকেশ্বর দত্ত স্মৃতি সংরক্ষণ কমিটির সম্পাদক মধুসূদন চন্দ্র, গবেষক ডঃ রমজান আলী, সাংবাদিক সফিকুল ইসলাম, শেখ শাহজাহান, নূর মোহাম্মদ খান । ডঃ রমজান আলী বলেন এই জাতীয় পতাকাটি ভবিষ্যৎ প্রজন্মের ইতিহাস গবেষকদের জন্য একটি ঐতিহাসিক দলিল হয়ে থাকবে ।
ভারতী দত্ত জানান, আগামী ৮ই এপ্রিল মিউজিয়ামের উদ্বোধন অনুষ্ঠানে তিনি নিজে উপস্থিত থাকবেন এবং ভগৎ সিং, রাজগুরু ও সুখদেবের বংশধরদের আমন্ত্রণ জানানো হবে। পূর্ব বর্ধমানের জেলা শাসক, এসডিও, বিডিও , ওসি সহ প্রশাসনিক আধিকারিকদের প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করে ভারতী দেবী বলেন, তার বাবার স্মৃতি চিরস্মরণীয় করে তোলার জন্য এ উদ্যোগ একটি দৃষ্টান্ত স্থাপন করবে।
পূর্ব বর্ধমানের জেলা শাসক আয়েশা রাণীর উদ্দেশ্যে একটি ভিডিও বার্তার মাধ্যমে ভারতি দেবী উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে জেলা শাসককে উপস্থিত থাকার জন্য আমন্ত্রণ জানান । বটুকেশ্বর দত্তর জন্মদিনে জেলাশাসক উপস্থিত থাকার জন্য তিনি তার প্রতি বিশেষ কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন। দক্ষিণ দামোদর সহ এলাকার মানুষদেরকে ৮ই এপ্রিল মিউজিয়াম উদ্বোধনের দিনে উপস্থিত থাকার জন্য আহ্বান জানিয়েছেন। এই উদ্যোগে সাধারণ মানুষও বিপ্লবীর প্রতি শ্রদ্ধা জ্ঞাপনের সুযোগ পাবেন।