বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী এক্স হ্যান্ডেলে একটি ভিডিও পোস্ট করেন, যাতে তিনি দাবি করেন, রাজ্যে এখনও রেশন কেলেঙ্কারি চলছে। ভিডিওতে দেখা যায়, গণবন্টন ব্যবহৃত চালের বস্তা খুলে চাল বের করা হচ্ছে। এর মধ্যে একজনকে বলতে শোনা যায়, “গণবন্টনের জন্য ব্যবহৃত চাল কীভাবে পালিশ হচ্ছে। এই পালিশ করা চাল আবার সরকারের ঘরে চলে যাবে”।
এই ভিডিওটি পোস্ট করার পর, রাজ্যের প্রশাসন নড়েচড়ে বসে। নবান্ন থেকে নির্দেশ দেওয়া হয়, তদন্তে কোনো চালকলের নাম উঠে এলে তা খতিয়ে দেখার জন্য জেলা প্রশাসনকে নির্দেশিত করা হয়।
খাদ্য দফতরের তদন্ত
এবং তার পরেই, পূর্ব বর্ধমান জেলার প্রশাসন তদন্ত শুরু করে। খাদ্য দফতরের তদন্তকারী দল ৫ সদস্যের একটি টিম গঠন করে, যারা উচালন গ্রাম পঞ্চায়েতের নন্দনপুর এলাকায় অবস্থিত একটি চালকলের তদন্ত শুরু করেন। ৫ ঘণ্টা ধরে চালকলটিতে তল্লাশি চালানোর পর, খাদ্য দফতরের রিপোর্টে জানানো হয়, ওই চালকলটি গণবন্টন ব্যবস্থার সাথে যুক্ত নয় এবং সেখানে কোনো রেশন চালের বস্তা পাওয়া যায়নি।
তবে, তদন্তকারীরা সেখানে হাজার হাজার কুইন্টাল পুষ্টিকর চাল দেখতে পান, যা মিড-ডে মিল এবং অঙ্গনওয়াড়ি কেন্দ্রেও সরবরাহ করা হয়। এছাড়া তারা দেখতে পান, কিছু চাল ট্রাকে করে বাজারে বিক্রি হওয়ার উদ্দেশ্যে পাঠানো হচ্ছিল।
চালকলের মালিকের দাবি
চালকলের মালিক সৌগত সাহানা দাবি করেছেন যে, তাদের চালকল গণবন্টন ব্যবস্থার সাথে যুক্ত নয়। তিনি জানিয়েছেন, ওই চাল খোলা বাজার থেকে কেনা হয়েছিল। যদিও তদন্তকারীরা অভিযোগ করেছেন যে, চালকলের মালিক তদন্ত চলাকালীন তাদের সঙ্গে দেখা করেননি। খাদ্য দফতর পুলিশকে চিঠি পাঠিয়ে ওই চালের উৎস সম্পর্কে আরও খতিয়ে দেখার জন্য নির্দেশ দিয়েছে।
গণবন্টন ব্যবস্থায় পুষ্টিকর চাল
খাদ্য দফতরের তদন্তকারীরা জানিয়েছেন, নন্দনপুরে খুঁজে পাওয়া পুষ্টিকর চাল, যা গণবন্টন ব্যবস্থায় ব্যবহৃত হয়, তা মূলত মিড-ডে মিল এবং অঙ্গনওয়াড়ি কেন্দ্রেও সরবরাহ করা হয়। তবে, এই চালগুলো রেশন ডিলারদের মাধ্যমে খোলা বাজারে বিক্রি হয়ে যায়, এবং সেই বস্তাগুলি পরে রেশন ডিলাররা খোলা বাজারে বিক্রি করে দেন।
পূর্ব বর্ধমানের এই চালকলের ঘটনায় তদন্তের প্রক্রিয়া এখনও চলমান। খাদ্য দফতরের দাবি অনুযায়ী, চালকলটি গণবন্টন ব্যবস্থার সঙ্গে যুক্ত নয়, তবে এলাকাবাসীদের বক্তব্য, চালকলের বাইরে ট্রাকগুলিকে বের হতে নিষেধ করা হয়েছিল। এভাবে, এই চালকলের কর্মকাণ্ডে কোনো অস্বাভাবিকতা রয়েছে কিনা, তা খতিয়ে দেখতে তদন্তকারীরা পরবর্তী পদক্ষেপ নেবেন।