আবহাওয়া দক্ষিণবঙ্গ শিক্ষা লাইফ স্টাইল স্বাস্থ্য ভ্রমন ধর্ম কৃষি কাজ ক্রাইম

সরকারি আধিকারিক জানোয়ার!! তাজপুরের বন আধিকারিককে বেনজির কটুক্তি রাজ্যের কারামন্ত্রীর- তোলপাড় রাজ্য রাজনীতি

By krishna Saha

Published :

WhatsApp Channel Join Now

প্রদীপ চট্টোপাধ্যায় তাজপুর ৩ আগষ্ট

বনদফতরের জায়গা দখল রুখতে যাওয়া বন আধিকারিককে ’জানোয়ার-বেয়াদপ’ বলে কটুক্তি ।এমনকি তাঁকে “ডাং“ নিয়ে পেটানোর হুঁশিয়ারি পর্যন্ত দিতে ছাড়লেন না রাজ্যের কারামন্ত্রী অখিল গিরি।শনিবার দুপুরে পূর্ব মেদিনীপুরের তাজপুরে
হওয়া এমনই ঘটনায় তোলপাড় পড়ে গিয়েছে রাজ্যজুড়ে । বছর খানেক আগে দেশের রাষ্ট্রপতিকে নিয়ে কুমন্তব্য করে বিতর্কে জড়িয়ে ছিলেন রাজ্যের মন্ত্রী তথা রামনগরের বিধায়ক অখিল গিরি। তার ওই মন্তব্যের জন্যে স্বয়ং মুখ্যমন্ত্রীকে ক্ষমা চাইতে হয়েছিল। তার পরেই
অখিল আছেন অখিলেই ।তাঁর এদিনের অশালীন মন্তব্য ফের টোলপাড় ফেলে দিয়েছ।অখিল গিরির এই ধরনের মন্তব্যে ক্ষুব্ধ বন দপ্তর অখিল গিরির মন্তব্যের ভিডিও মুখ্যমন্ত্রীর কাছেও পাঠানোর সিদ্দান্ত নিয়েছে।

জানা গেছে, গোটা ঘটনার সূত্রপাত তাজপুরে দোকান বসানোকে কেন্দ্র করে। দুর্যোগের ফলে সমুদ্রের পাড়ে থাকা প্রায় বাইশটি দোকান ভেঙে যায়। সেই সমস্ত দোকানগুলিকে কয়েক মিটার পিছিয়ে একটি জায়গায় বসার জন্য বলেন এলাকার বিধায়ক তথা মন্ত্রী অখিল গিরি। তবে তিনি যে জায়গায় দোকান বসার জন্য বলেন সেটি বন দপ্তরের জায়গা। আর তাতেই বিপত্তি। বন দপ্তরের তরফ থেকে সমস্ত দোকান উঠিয়ে দেওয়া হয়।

একপ্রকার অবৈধভাবে মন্ত্রী অখিলগিরি যে দোকান বসার অনুমতি দিয়েছিলেন তার প্রতিবাদ করে বন দপ্তর। শনিবার সকালে যখন তাজপুরের ওই এলাকায় মন্ত্রী অখিল গিরি এবং কাঁথির রেঞ্জ অফিসার মনীষা সাউ গিয়ে পৌঁছান তখনই কার্যত মন্ত্রী বনাম রেঞ্জ অফিসারের মধ্যে বাদানুবাদ শুরু হয়। সেখানেই একের পর এক বিরূপ মন্তব্য করেন মন্ত্রী। মন্ত্রী ওই মহিলা অফিসারকে বলেন, “আপনি সবাইকে নিয়ে চলার চেষ্টা করুন না হলে আপনার আয়ু ৭-৮ দিন। বন দপ্তরে কত দুর্নীতি এবং বিট অফিসারের বিরুদ্ধে কি আছে আমি কিন্তু সব জানি ফাঁস করে দেব।” পাশাপাশি তিনি আরও বলেন, “এই স্পট আমরা নিলাম। এরপর যদি আসেন আপনি ফিরে যেতে পারবেন না। আপনি সরকারি কর্মচারী মাথা নিচু করে কথা বলবেন। এরকম বেয়াদব, জানোয়ার রেঞ্জার আগে কখনো আসেনি। ভদ্রভাবে হবেনা ডাং নিয়ে যখন পেটাবো বুঝবেন।” রাজ্যের মন্ত্রীর এ ধরনের বক্তব্য প্রকাশ হতেই কার্যত নিন্দার ঝড় ওঠে সমাজে। একুশের মঞ্চ থেকেই তৃণমূল নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বিবেকবান হওয়ার কথা বলেছিলেন। সেই দলেরই মন্ত্রীর মুখে এ ধরনের কথায় কার্যত নিন্দার ঝড়।

See also  মঙ্গলকোট আমরা কজন পরিচালনায় দুই দিনব্যাপী ফুটবল প্রতিযোগিতা

যদিও অখিল গিরি পরে বলেন, “ ওই মহিলা যিনি এখানে রেঞ্জার হয়ে এসেছেন খুবই খারাপ ব্যবহার করেন মানুষের সঙ্গে। আমি মনে করি ওখানে আমাদের লোকেরা অনেক শ্রদ্ধা দেখিয়েছেন।”

এদিকে ওই ফরেস্ট অফিসার মনীষা সাউ জানান, “দোকানদারের দোকান তোলার জন্য দুবার নোটিশ দেয়া হয়েছিল তাও তোলেনি। সমুদ্রের ঢেউয়ের দোকান ভেঙে যাওয়ার পর পেছনে ওরা দোকান করছে। আর মন্ত্রী তাকে সাপোর্ট করছে। এটা নিয়েই বলতে যেতে আমাকে হুমকি দেওয়া হয়।”

এ বিষয়ে তৃণমূল মুখপাত্র কুনাল ঘোষ নিজের এক্স হ‍্যান্ডেলে জানিয়েছেন, “মন্ত্রী অখিল গিরির কথা এবং আচরণের বিরোধিতা করছি। এটা অবাঞ্ছিত। বনদপ্তর নিয়ে কিছু বলার থাকলে মন্ত্রী বীরবাহা হাঁসদাকে বলতে পারতেন। তার বদলে মহিলা অফিসারের সঙ্গে দুর্ব্যবহার দুর্ভাগ্যজনক।”

বিজেপি মুখপাত্র শমিক ভট্টাচার্য জানান, “রাজ‍্য সরকার সরকারি কর্মচারীদের কিভাবে দেখেন, কিভাবে তারা রাজ্যকে দেখতে চায় এবং রাজ্য চালাচ্ছে আজকে অখিল গিরির বক্তব্যে সেটা স্পষ্ট হয়ে গেল। তৃণমূলের নেতা-মন্ত্রীরা কিছু জায়গায় বেআইনিভাবে লোকজনদের ব্যবসা করার সুযোগ করে দিয়েছেন। তাই স্বাভাবিকভাবে তাদের উচ্ছেদ করতে গেলে দলের অভ্যন্তরে অসন্তোষ তৈরি হবে। আর সেটাই হয়েছে এবং ঘটনা চক্রে সেটা ক্যামেরাবন্দি হয়েছে।”

krishna Saha

আমার নাম কৃষ্ণ কুমার সাহা, আমি ফুল টাইম সাংবাদিকতা করি।গত ৮ বছর ধরে এই পেশায় আছি