আবহাওয়া দক্ষিণবঙ্গ শিক্ষা লাইফ স্টাইল স্বাস্থ্য ভ্রমন ধর্ম কৃষি কাজ ক্রাইম

মেয়ের মৃত্যু সংবাদ পেয়েও লকডাউনের জেরে বিহারের বাড়িতে ফিরতে পারছেনা পরিযায়ী শ্রমিক মা

By krishna Saha

Published :

WhatsApp Channel Join Now

 

বাবু সিদ্ধান্ত বর্ধমান ৮ এপ্রিল
সন্তানের অকাল মৃত্যুর খবর পেয়েও লকডাউন চলায় বিহারের বাড়িতে ফিরতে পারছেন না পরিযায়ী শ্রমিক মা। সন্তান শোকে এখন পূর্ব বর্ধমানের কাটোয়া পুরসভা নিয়ন্ত্রিত বাজারে ছাউনিতে বসেই চোখের জল ফেলে চলেছেন মা অনিতা দেবী। নিজের সন্তানকে শেষবারের মত একবার দেখতে পাবার ব্যবস্থা করেদেবার জন্য তিনি সবার কাছে করজোড়ে প্রার্থনা জানিয়ে চলেছেন । কিভাবে এক মায়ের এই আবেদন কার্যকর করা যায় তারই প্রচেষ্টা শুরু করেছে কাটোয়া পুরসভা কর্তৃপক্ষ ।
প্রশাসন ও স্থানীয় সূত্রে জানাগেছে, বিহারের মুঙ্গের ,ভাগলপুর ও বাঁকা জেলা থেকে ১৬০ জন পরিযায়ী শ্রমিক পূর্ব বর্ধমানের পূর্বস্থলীর
লক্ষীপুরে কাজে এসেছিলেন ।সেই পরিযায়ী শ্রমিক দলেই ছিলেন মুঙ্গেরের অনিতা দেবী। আর পঞ্জাবের হরিয়ানায় কাজে যান তাঁর স্বামী । সবকিছু ঠিকঠাক চললেও মারণ করোনা ভাইরাস সংক্রমণ প্রতিরোধের জন্য দেশ জুড়ে লকডাউন জারি হবার পরেই বিপাকে পড়েযান পূর্বস্থলীতে কাজে আসা পরিযায়ী শ্রমিকরা।
কাজ কর্ম বন্ধ হয়ে যাওয়ায় এই সকল পরিযায়ী শ্রমিকরা যে যার নিজের বাড়ি ফেরার জন্য উদগ্রিব হয়ে পড়েন ।তারা পূর্বস্থলী থেকে রওনা দিয়ে পৌছেযান কাটোয়া শহরে ।পরিযায়ী শ্রমিকদের আবেদন মেনে গত ২৫ মার্চ কাটোয়া প্রশাসন তাঁদের বিহারে পৌছে দেবার উদ্যোগ নেয়। কিন্তু পরিযায়ী শ্রমিক বোঝাই বাস বিহারের বর্ডারে পৌছাতেই বিহার প্রশাসন ওই বাস আটকে দেয় । পরিয়ায়ী শ্রমিকদের বিহারে ঢুকতে দেওয়া হয়না ।
বাধ্য হয়ে ১৬০ জন পরিযায়ী শ্রমিককে নিয়ে ২৬ মার্চ বাসটি কাটোয়ায় ফিরে আসে । তারপর থেকে পরিযায়ী শ্রমিকদের ঠাঁই হয় কাটোয়া পুরসভা নিয়ন্ত্রিত বাজারের ছাঁউনিতে ।এই অবস্থার মধ্যেই মঙ্গলবার রাতে মুঙ্গেরের তাড়ি গ্রামের বাড়িথেকে অনিতা দেবীর কাছে তাঁর মেয়ে আরতি কুমারি (১৫) এর মৃত্যু সংবাদ আসে ।মেয়ের মৃত্যু সংবাদ পেয়েই কান্নায় ভেঙে পড়েন অনিতাদেবী।
এদিন অনিতা দেবী বলেন ,‘ তাঁর মেয়ে সুস্থই ছিল। শুধু মা ও বাবা কবে বাড়ি ফিরবে এই চিন্তা করে করে মেয়ে অসুস্থ হয়ে পড়ে । মঙ্গলবার রাতে বাড়িতেই মেয়ের মৃত্যু হয়। বাড়িতে আরো দুটি শিশু কন্যা রয়েছে অনিতা দেবীর । তাঁদের কথা ভেবেই এখন তিনি আরো ব্যাকুল হয়ে পড়েছেন । ’
বিহারের মুঙ্গেরের বাড়িতে পৌছানোর জন্য অনিতা দেবী এদিন চোখের জল ফেলতে ফেলতেই সকলের কাছে প্রার্থনা জানিয়ে চলেন । কাটোয়া পুরসভার পুরপিতা রবীন্দ্রনাথ চট্টোপাধ্যায় এদিন সব শুনে বলেন , খুবই বেদনা দায়ক ঘটনা । শোকাতুর অনিতা দেবীকে যাতে তাঁর বাড়ি পৌছে দেওয়া যায় সেব্যাপারে উদ্যোগ নেওয়া হচ্ছে ।

 

See also  দুই দাঁতাল হানা দেওয়ায় পূর্ব বর্ধমানের খণ্ডঘোষে শিকেয় উঠলো লকডাউন

krishna Saha

আমার নাম কৃষ্ণ কুমার সাহা, আমি ফুল টাইম সাংবাদিকতা করি।গত ৮ বছর ধরে এই পেশায় আছি