প্রদীপ কুমার মন্ডল,খণ্ডঘোষ,১৭ সেপ্টেম্বর : – – আজ থেকে প্রায় ৭০০ বৎসর আগে গ্রামের কোন মহিলা দুর্গাপূজার ৪ দিন মায়ের পূজা দেখতে পেতেন না।এমনকি মন্দিরে ওঠাও নিষেধ ছিল। গ্রামের মুলদেবী শঙ্করী মায়ের মুর্তিকেই দুর্গা রূপে পূজা করা হত।শঙ্করী মায়ের মূর্তির রং ছিল কালো।বাড়ির বা গ্রামের মহিলাদের এই রূপ অহেতুক আচরণ মেনে নিতে পারেননি গ্রামের রায় পরিবারের পুরুষ মানুষরা।তাই গ্রাম ও পার্শ্ববর্তী গ্রামের মহিলাদের দুর্গাপূজা দেখার জন্য প্রায় ৭০০ বৎসর আগে দুর্গাপূজা শুরু করেন রায় পরিবারের সদস্য গণেশ রায়। রায় পরিবারের ২৫ তম বংশধর মদন মোহন রায় বলেন পূর্ব পুরুষরা মহিলাদের দুর্গা পূজার অনুষ্ঠান দেখানোর জন্যই দুর্গা পূজা শুরু করেছিলেন। মূর্তি তৈরি করে দুর্গা পূজার আয়োজন প্রায় শেষের দিকে।ষষ্ঠী পূজার দিন সকালে তৎকালীন বংশধররা মন্দিরে গিয়ে দেখেন মায়ের মূর্তি ভেঙে পড়ে আছে।পূজারী এসে খবর দেন এই দুর্গা মায়ের মূর্তির রং সাদা হওয়ার জন্যই শঙ্করী মা স্বপ্নে আমাকে বলেন মূর্তি পূজা করবি না।পটচিত্র এঁকে দুর্গা পূজা কর।প্রথমে আমার পূজা হবে পরে দুর্গা মূর্তি পূজা হবে।সেই মত অনুসারে আজও সেই নিয়মেই পূজা হয়ে আসছে রায় পরিবারের দুর্গা পূজা। এলাকায় মা দুর্গা ভাঁড়ে মা নামে পরিচিত।যে পূজারী ও পুরোহিত সহ ঢাকিরা শঙ্করী মায়ের পূজা করবেন,ওনারাই শঙ্করী মায়ের পূজার পর ভাঁড়ে মায়ের পূজা করবেন।ভাঁড়ে মায়ের পূজার কিছু আলাদা নিয়ম আছে।সপ্তমী পূজার ও নবমী পূজার দিন ছাঁচি কুমড়ো বলি দেওয়া হয়। অষ্টমী পূজার পর ছাগ বলি দেওয়া হয়।দশমী পূজার পর চ্যাং মাছ বলি দেওয়া হয়।পূজার সমস্ত নিয়ম আজ মেনে চলছে আমাদের রায় পরিবার।ভারতবর্ষের বিভিন্ন প্রান্তে বসবাস করা রায় পরিবারের সমস্ত মানুষ পূজার এই চারটি দিন শাঁকারি গ্রামে একসঙ্গে মিলেমিশে থেকে মায়ের পূজায় আনন্দ করা হয়।শঙ্করী মায়ের মন্দিরের পাশেই ভাঁড়ে মায়ের মন্দির।পূজার চারটি দিন গ্রামের ও পার্শবর্তী গ্রামের মানুষরা একই সঙ্গে শঙ্করী মাকে দুর্গা রূপে পূজা ও ভাঁড়ে মায়ের পূজা দেখার জন্য ভিড় জমান। একটি ভাঁড়ের ওপর মায়ের পটচিত্র নিয়েই দশমীর রাত্রে ভাসান অনুষ্ঠান চোখে পড়ার মতোই।
krishna Saha
আমার নাম কৃষ্ণ কুমার সাহা, আমি ফুল টাইম সাংবাদিকতা করি।গত ৮ বছর ধরে এই পেশায় আছি