বর্ধমান ( প্রদীপ চট্টোপাধ্যায় ) :- ‘ঘুঘুর বাসা ’ভূমি সংস্কার ও ভূমি রাজস্ব দফতর। সম্প্রতি বাঁকুড়ায় প্রশাসনিক বৈঠকে যোগদিয়ে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এমনটাই প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করেছিলেন। সেদিন মুখ্যমন্ত্রী যা বলেছিলেন তা যে নিছক কথার কথা ছিলনা তা প্রমাণ করেদিল বর্ধমানের এক জীবিত মহিলাকে মৃত দেখিয়ে তাঁর সম্পত্তি অপরের নামে রেকর্ড হয়েযাবার ঘটনা ।
বর্ধমান থানার নাড়ি গ্রামের পশ্চিমপাড়া নিবাসী মহুয়া ঘোষ বাস্তবে জীবিত থাকলেও ভূমি দফতরের নথি অনুযায়ী তিনি এখন মৃত ।তাঁর নামে ডেথ সার্টিফিকেটও দাখিল করা হয়েছে ভূমি দফতরে । যার সাহায্যেই জীবিত স্ত্রী কে মৃত দেখিয়ে তাঁর সম্পত্তি দুই মেয়ে ও নিজের নামে রেকর্ড করে নেবার অভিযোগ উঠেছে স্বামীর বিরুদ্ধে। এই জালিয়াতির ঘটনায় জড়িতদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহনের দাবিতে প্রতাড়িত মহিলা বর্ধমান থানা ও পূর্ব বর্ধমান জেলা পুলিশ সুপারের দফতরে অভিযোগ জানিয়েছেন । নিজের জমি যাতে ফিরে পান তার ব্যবস্থা করে দেবার আর্জিও মহুয়াদেবী পুলিশ সুপারের কাছে জানিয়েছেন । মহিলার আইনজীবী হরদীপ সিং আহলু্ওয়ালিয়া বলেন, ঘটনার সঙ্গে কোন জালিয়াতি চক্র জড়িত রয়েছে । জমির মিউটেশনের জন্য ভূমি দফতরে ওই মহিলার ডেথ সাির্টফিকেট জমা করা হয়েছে ।জলজ্যান্ত এক মহিলার নামে কিভাবে ডেথ সাির্টফিকেট বের হল সেটাই আশ্চর্য্যের । আইনজীবী আরও বলেন,ডেথ সাির্টফিকেটটি আসল কিনা সেই বিষয়টি অবশ্যই ভূমি দফতরের খতিয়ে দেখা উচিত ছিল। অভিযোগের তদন্ত শুরু হয়েছে বলে পুলিশ সুপার ভাস্কর মুখোপাধ্যায় জানিয়েছেন ।
মহুয়া ঘোষ লিখিত অভিযোগে পুলিশ সুপারকে জানিয়েছেন , ২০০৪ সালে তাঁর বিয়ে হয়েছিল। তাঁর দুটি মেয়েও আছে। স্বামীর বিরুদ্ধে তিনি বধূ নির্যাতনের মামলা করেছেন। সেই মামলা এখনও চলছে।একই সাথে কাটোয়া আদালতে খোরপোষের মামলাও চলছে । নাড়ি মৌজায় তাঁর একটি ১১৫৭ বর্গফুটের জমি রয়েছে। ২০১১ সালে তিনি সেই জমিটি কিনেছিলেন । সেই জমির পরচা করার জন্য এ বছর তিনি বিএলআরও অফিসে যান। সেখানে গিয়ে তিনি জানতে পারেন, গত বছরের গত ১৮ নভেম্বর তাঁর জমিটি স্বামী নিজের ও দুই মেয়ের নামে রেকর্ড করে নিয়েছে। রেকর্ডে ২০১৭ সালের ১ জানুয়ারি তাঁর মৃত্যু হয়েছে বলে দেখানো হয়েছে । মহুয়াদেবী বলেন , তিনি জীবিত আছেন বলেই কাটোয়া আদালত গত ১৭ ডিসেম্বর তাঁকে খোরপোষ দেওয়ার নির্দেশ স্বামীকে নির্দেশ দিয়েছে। তা সত্বেও তাঁকে মৃত ঘোষণা করে তাঁর নিজের জমির মালিকানার বদল ঘটানো হল । মহুয়াদেবী বলেন এই জালিয়াতি কাণ্ডে তাঁর স্বামী ও তার তিন ভাই এবং আরও কয়েকজন জড়িত বলে তিনি মনে করছেন। পুলিশ কি ব্যবস্থা নেয় সেদিকেই এখন মহিলা তাকিয়ে রয়েছেন ।
krishna Saha
আমার নাম কৃষ্ণ কুমার সাহা, আমি ফুল টাইম সাংবাদিকতা করি।গত ৮ বছর ধরে এই পেশায় আছি