সম্প্রতি দেশের বিভিন্ন প্রান্তে বাঙালিদের উপর আক্রমণের ঘটনা বৃদ্ধি পাওয়ায় ভাষা ও জাতিগত পরিচয় রক্ষার দাবিতে ফের সোচ্চার হয়েছে বাংলা। বিশেষ করে মাতৃভাষায় কথা বললেই ‘বাংলাদেশি’ তকমা দিয়ে হয়রানির অভিযোগ সামনে এসেছে। এই প্রেক্ষিতে, মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ইতিমধ্যেই ভাষা আন্দোলনের কর্মসূচি ঘোষণা করেছেন। ঠিক তার আগে, কলকাতা পুরসভাও বাংলা ভাষা রক্ষায় এক গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ নিল।
শুক্রবার পুরসভার চেয়ারপার্সন মালা রায় নির্দেশ দেন যে, “পুরসভার যাবতীয় প্রশাসনিক কাজকর্ম শুধুমাত্র বাংলাতেই পরিচালিত হবে।” ইংরেজি বা হিন্দি নয়, এখন থেকে বাংলা হবে একমাত্র কাজের ভাষা।

ঘটনার সূত্রপাত হয় যখন একটি অধিবেশনে তৃণমূলের এক কাউন্সিলর ইংরেজিতে প্রশ্ন তোলেন। সেই সময় চেয়ারপার্সন তাঁকে থামিয়ে বলেন, “ইংরেজিতে প্রশ্ন চলবে না। সমস্ত প্রশ্ন ও উত্তর বাংলায়ই দিতে হবে।” লিখিত নথি থেকে শুরু করে প্রশ্নোত্তর পর্ব—সবকিছু বাংলায় রেকর্ড করার নির্দেশও দেন তিনি।
তিনি আরও জানান, “বাংলার বাইরে যে ভাবে বাংলা ভাষা ও সংস্কৃতিকে কোণঠাসা করার চেষ্টা হচ্ছে, তার প্রতিবাদেই এই পদক্ষেপ।” তাঁর মতে, অধিকাংশ কাউন্সিলর বাংলাভাষী হওয়ায়, প্রশাসনিক স্তরে বাংলায় কাজ করতে কোনও অসুবিধা হবে না।
একুশে জুলাইয়ের সমাবেশ থেকে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ঘোষণা করেছিলেন, “২৭ জুলাই থেকে রবীন্দ্রনাথের স্মৃতিধন্য বোলপুর থেকেই শুরু হবে ভাষা আন্দোলনের পথ চলা।” সেই ঘোষণা অনুযায়ী, কলকাতা পুরসভার এই নতুন সিদ্ধান্ত ভাষা আন্দোলনের ভিত মজবুত করল বলেই মনে করছেন অনেকে।
প্রসঙ্গত, এর আগে শিলিগুড়িতে দোকানের নামফলক ও হোর্ডিংয়ে বাংলা লেখা বাধ্যতামূলক করা হয়েছিল। এবার সেই পথেই হাঁটল কলকাতা পুরসভা।












