Krishak Setu Desk: চলে গেলেন বিশিষ্ট কবি রাহুল পুরকায়স্থ। প্রয়াণকালীন বয়স হয়েছিল ৬০। শুক্রবার দুপুর ২টো ১০ মিনিট নাগাদ কলকাতার এক বেসরকারি হাসপাতালে শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন তিনি। বেশ কিছুদিন ধরেই তিনি শারীরিক অসুস্থতায় ভুগছিলেন। পরিস্থিতি গুরুতর হয়ে পড়ায় তাঁকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। চিকিৎসকদের মতে, একাধিক অঙ্গ বিকল হয়ে যাওয়াতেই মৃত্যু হয় এই কবির। ‘নেশা এক প্রিয় ফল’, ‘ও তরঙ্গ লাফাও’, ‘আমার সামাজিক ভূমিকা’, ‘সামান্য এলিজি’র মতো উল্লেখযোগ্য কবিতার বইয়ের স্রষ্টা রাহুল পুরকায়স্থ বাংলা সাহিত্যের কবিতাঙ্গনে রেখে গেছেন নিজের গাঢ় ছাপ।
মূলত শ্রীহট্ট তাঁর পৈতৃক ভিটে হলেও রাহুল শৈশব থেকেই থাকতেন বেলঘরিয়ায়। বেড়ে ওঠা উত্তাল সত্তরের দশকের কলকাতায়। অল্প বয়স থেকেই কাব্যচর্চা শুরু করেন তিনি। তাঁর প্রকাশিত কাব্যগ্রন্থের সংখ্যা কুড়িরও বেশি। প্রথম বই ‘অন্ধকার, প্রিয় স্বরলিপি’। এরপর একের পর এক প্রকাশ পায় ‘আমার সামাজিক ভূমিকা’, ‘নেশা এক প্রিয় ফল’-এর মতো কাব্যগ্রন্থ। তাঁর লেখনীতে বাংলা কবিতা পেয়েছে এক স্বতন্ত্র কণ্ঠস্বর। সাহিত্যজগতে অবদানের স্বীকৃতি হিসেবে তিনি পেয়েছিলেন পশ্চিমবঙ্গ কবিতা আকাদেমির সুভাষ মুখোপাধ্যায় পুরস্কার। তাঁর বহু কবিতা ইংরেজি ও হিন্দি ভাষায় অনূদিত হয়েছে। পাশাপাশি তিনি যুক্ত ছিলেন সংবাদমাধ্যমের সঙ্গে।

তিনি একসময় লিখেছিলেন, “এ-শহরে প্রেম আসে/ উল্কাপাত হয়/ প্রতিটি সন্ধ্যাই জানি/ বিগ্রহের রতিচ্যুত ক্ষয়”… সেই প্রেমের আবেশ, উল্কাপাতের ঝলকানি পেরিয়ে চলে গেলেন কবি। রেখে গেলেন তাঁর অক্ষরসাধনা, যা ভবিষ্যতের কবি-পাঠকের হৃদয়ে বেঁচে থাকবে। নিজের কাব্যদৃষ্টিভঙ্গিতে তিনি একসময় উপলব্ধি করেছিলেন, ‘এইরূপে ক্রমে ক্রমে কবিতা মৃত্যুর দিকে যায়’। কিন্তু কবির দেহমৃত্যুর পরেও তাঁর সৃষ্টি থেকে যাবে কালজয়ী হয়ে— ‘শ্রুতি ও স্মৃতির মাঝে’।