পূর্ব বর্ধমান: আউশগ্রামের বারোসতীর ডাঙ্গায় যৌথ বিসর্জন ঘিরে মেতে উঠলেন এলাকাবাসী। আশপাশের বেশকয়েকটি গ্রাম মিলে একত্রে প্রতিমা বিসর্জন করা এলাকার পুরানো এক ঐতিহ্য। সেই ঐতিহ্য মেনেই এবছরেও বুধবার যৌথ শোভাযাত্রা হল আউশগ্রামের বারোসতীর ডাঙ্গায়। তাতে মাতলেন এলাকাবাসী।
আউশগ্রামের উত্তর রামনগরের বারোসতীর ডাঙ্গায় এই যৌথশোভাযাত্রাকে ভাসানমেলা বলেন এলাকাবাসী। স্থানীয়রা জানিয়েছেন প্রায় ২০০ বছরের পরম্পরা মেনে আশপাশের গ্রামের দেবীপ্রতিমা কাঁধে করে নিয়ে আসা হয় বারোসতীর ডাঙ্গায়। সেখানে একে অপরের সঙ্গে বিজয়ার সৌহাদ্য বিনিময় করেন। ঢাক ঢোল কাঁসর ও নানান বাজনা বাজিয়ে আনন্দ উল্লাসে মাতেন গ্রামবাসীরা। কয়েকঘন্টা ধরে চলে। তারপর ফের যে যার প্রতিমা নিজেদের গন্তব্যে ফিরে গিয়ে নিরঞ্জন করে।
আউশগ্রামের উত্তর রামনগরের বারোসতীর ডাঙ্গা নিয়ে প্রচলিত রয়েছে এক জনশ্রুতি। প্রবীন বাসিন্দা অমর বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, উত্তররামনগরের এই ডাঙ্গায় আগে একটি উঁচু ঢিবি চিল। প্রাচীনকালে সেই ডিবিতেই সতীদাহ হত। অতীতকালে এই ডাঙ্গাতেই ১২ জন সতীতে দাহ করা হয়েছিল। সেই থেকে এই উঁচু ফাঁকা জায়গাটি বারো সতীর ডাঙ্গা নামে পরিচিত।”
স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে রামনগর, গোষ্বামীখন্ড, মল্লিকপুর, খটনগর, প্রভৃতি ৬ – ৭ টি গ্রাম মিলে পারিবারিক ও সর্বজনীন পুজো হয় বেশ কয়েকটি। ওই সমস্ত গ্রামের মিলে ১৪ – ১৫ টি প্রতিমাকে কাঁধে চাপিয়ে নিয়ে আসা হয় বারোসতীর ডাঙ্গায়। এদিন বারোসতীর ডাঙ্গা হাজারো মানুষের ভিড়ে হয়। মেলা বসে। স্থানীয় গ্রামবাসী প্রবীর বিশ্বাস বলেন, ” আমি কর্মসূত্রে বাইরে থাকি। তবে এই বিসর্জন দেখতে প্রতিবছর বাড়ি আসি। এত মানুষের সঙ্গে বিজয়ার শুভেচ্ছা বিনিময়ের সুযোগ আর পাওয়া যায় না।
গ্রামবাসীরা জানিয়েছেন প্রথা মেনে প্রতিবছর বিজয়াদশমীর রাতে বারোসতীর ডাঙ্গায় এই যৌথ শোভাযাত্রা হয়। কিন্তু মঙ্গলবার বৃষ্টির কারনে তা হয়নি। পরিবর্তে এদিন সকালে করা হয়। বেশ কয়েকবছর আগেও আকই কারনে একাদশীর দিন এই শোভাযাত্রা করতে হয়েছিল।